আমাদেরকে বেঁচে থাকতে হলে শুধুমাত্র আত্মিক উন্নয়ন ঘটালে চলবে না। শারীরিক উন্নতির দিকেও আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে এবং রোগগ্রস্থ হওয়ার চেয়ে সুস্বাস্থ্য আমাদের নিকট অধিক কাম্য হওয়া উচিত। মন ও দেহ এ দুটো নিয়েই একজন পরিপূর্ণ মানুষ। তাই মনের উন্নতির সাথে সাথে দৈহিক উন্নতির দিকেও আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে। এজন্য প্রতিটি মানুষই যদি শারীরিক ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম কানুন মেনে চলতে পারে তবে দীর্ঘদিন যাবৎ সুস্বাস্থ্যের অধিকারী থাকতে পারে।
১। পরিপূর্ণ বিশ্রাম এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানোর চেষ্টা করুন। ২। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকুন এবং নিয়মতান্ত্রিক জীবন যাপন করুন।
৩। প্রতিমাসে সমস্ত শরীর ভালভাবে পরীক্ষা করে নিন।
৪। ঘরবাড়ি পরিস্কার করে রাখুন এবং সুন্দরভাবে সাজিয়ে গুছিয়ে রাখুন। ৫। ধুমপান করার অভ্যাস থাকলে তা বন্ধ করুন এছাড়া কোন ধরনের নেশা
করা উচিত নয়।
৬। খাওয়ার পূর্বে ভালভাবে হাত ধুয়ে নিন। মলমূত্র ত্যাগের পর সাবান দিয়ে
হাত ধোবেন।
৭। দিনে দু'বার দাঁত ব্রাশ করুন।
৮। রাস্তার খোলা এবং বাসী খাবার খাবেন না। সব সময় তাজা খাবার খেতে
চেষ্টা করুন।
৯। ভাজা পোড়া খাবার যত পারেন এড়িয়ে চলবেন। তাজা ফল শাক সব্জি পানি ইত্যাদি বেশি করে খাবেন।
১০। স্বাস্থ্যসম্মত ও পুষ্টিকর খাবার খাবেন। শরীরের ওজন ঠিক রাখুন।
১১। নিয়মিতভাবে শরীর চর্চা অব্যাহত রাখুন। ব্যায়াম আপনার টেনশন
দুঃখ, দুশ্চিন্তা কাটাতে সাহায্য করবে।
১২। দৈহিক ছোটখাটো সমস্যাগুলোতে ওষুধ এড়িয়ে চলুন। ওষুধ খেয়ে সমস্যা দূর না করে শারীরিক সমস্যাকে গোড়া থেকে নির্মূল করুন।
১৩। অবসাদগ্রস্থ অবস্থায় যখন তখন ঘুমের ওষুধ খাবেন না।
১৪। যে সব খাবার খেলে বদহজম হবার সম্ভাবনা থাকে সে সব খাবার এড়িয়ে চলুন।
১৫। কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিশ্রাম করুন এবং মাঝে মধ্যেই প্রকৃতির কাছাকাছি বেড়িয়ে আসুন।
১৬। চা, কফি, মদ অন্যান্য ড্রাগ, পান, জর্দা, তামাক ইত্যাদি পরিহার করে চলুন। চকলেট, আইসক্রীম, মিষ্টি বেশি খাবেন না।
১৭। কাজ করুন এবং কাজের মধ্যে জীবনের আনন্দ খুঁজে নিন।
১৮। সারাক্ষণ দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হয়ে থাকবেন না।
১৯। ব্যায়াম ও খেলাধুলাকে জীবনের অংশ হিসাবে ধরে নিন।
২০। সুযোগ পেলেই যৌন অনাচারে লিপ্ত হবেন না। যৌনতার ব্যাপারে পরিমিত ও সংযমী হোন।
২১। খাবার দেখলেই খাবারের উপর ঝাঁপিয়ে পড়বেন না। ভরপেট খাওয়া
থেকে দূরে থাকুন।
২২। প্রচুর মাছ গোশত খাওয়ার চাইতে সালাদ ও ফলের রস বেশি করে খাবেন।
২৩। অলস অবস্থায় দিন না কাটিয়ে গঠনমূলক কাজ করুন এবং মনকে ভাল রাখুন।
২৪। নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস গড়ে তুলুন। নিয়মিত হাঁটতে পারলে আপনার ডায়াবেটিস, প্রেসার ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
২৫। যতদূর সম্ভব যানবাহনে চলাচল করা থেকে বিরত থাকুন। সময় থাকলে হেঁটে একস্থান থেকে অন্য স্থানে যাতায়াত করুন। লিফটে না চড়ে সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠুন।
২৬। জীবনের ক্ষেত্রে কিছু সাবধানতা অবলম্বন করুন। যে সব এলাকায় চুরি ডাকাতি, হাইজ্যাকের ভয় আছে সে ধরনের বিপজ্জনক এলাকা দিয়ে রাতে চলাচল করবেন না। প্রখর সূর্যকিরণ এড়িয়ে চলার জন্য রোদে চলাচল করার মুহূর্তে ছাতা ব্যবহার করুন। ধোঁয়া ও ধূলিপূর্ণ স্থান এড়িয়ে চলুন। যতদূর সম্ভব পাবলিক টয়লেট ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। বিপজ্জনক ব্যক্তিদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন।
২৭। উৎফুল্ল থাকার চেষ্টা করুন। দেহের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার দারুণ ক্ষতি করে থাকে হতাশা। অতিরিক্ত হতাশাগ্রস্থ ব্যক্তি ক্যানসারের মতো মারাত্মক ব্যধিতে আক্রান্ত হতে পারে।
২৮। ক্রোধ দমনের স্ট্যাটেজি মেনে চলুন। ক্রোধের মূল্যায়ন দরকার। পরিস্থিতি পরিবর্তনের জন্য কিছু করার না থাকে তবে ক্রোধকে তুলে হান। লোকজন আপনার মনোভাব বুঝতে না পারলে রাগ করবেন না। 'মা' বলতে শিখুন। উত্তেজিত হলে দশ মিনিট বিশ্রাম নিন। রাগের কারণ সৃষ্টিকারীকে ক্ষমা করে দিন রাগ চলে যাবে।
২৯। ক্রমাগত চাপের মধ্যে থাকবেন না। এতে করে তলপেটে চর্বি জমতে পারে। ফলে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, খুন, ক্যানসার ইত্যাদি হতে পারে।