সিদ্বিরগঞ্জে শেখ হাসিনা ও শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা।
নিজস্ব প্রতিনিধি
সিদ্ধিরগঞ্জে হত্যা মামলা দায়ের হলো সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে গুলিবিদ্ধ হয়ে মাছ ব্যবসায়ী মো. মিলন নিহতের ঘটনায় এই মামলা হয়েছে।
রোববার (১৮ আগস্ট) দিবাগত রাত ১২টার দিকে নিহত মিলনের স্ত্রী শাহনাজ বেগম বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় এ হত্যা মামলাটি করেন। নিহত মিলন সিদ্ধিরগঞ্জপুল এলাকায় মাছের ব্যবসা করতেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর দুমকী থানার আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের ঝাটকা গ্রামে। নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আমীর খসরু মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলায় আসামি হিসেবে শেখ হাসিনা ও শামীম ওসমান ছাড়াও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ মোট ৬২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও অনেককে।
মামলার অন্যতম আসামিরা হলেন শামীম ওসমানের ছেলে অয়ন ওসমান, ভাতিজা আজমীরে ওসমান, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক হাজী ইয়াছিন মিয়া, (নাসিক) ৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও থানা যুবলীগের আহ্বায়ক মতিউর রহমান মতি, ৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও থানা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক শাহজালাল বাদল, ৪ নং-এর কাউন্সিলর নুর উদ্দিন মিয়া, ৮ নং ওয়াড কাউন্সিলর রুহুল আমিন, ১০ নং ওয়াড কাউন্সিলর ইফতেখার আলম খোকনসহ মহানগর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন সাজন, আওয়ামী লীগ নেতা জাকিরুল আলম হেলাল, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট খোকন সাহা ও সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ নিজাম প্রমুখ।
মামলার এজাহারে বাদী শাহনাজ বেগম উল্লেখ করেন, গত ২১ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে পণ্ড করতে আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী সংগঠনের সমর্থিত নেতা–কর্মীরা একজোট হয়ে আগ্নেয়াস্ত্র, পিস্তল, শটগান, ককটেল, লাঠিসোঁটাসহ নিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করে এবং জনমনে আতঙ্ক তৈরি করেন।
এসময় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের ও আসাদুজ্জামান খান ছাত্র-জনতার উদ্দেশ্যে এলোপাতাড়ি গুলি ও আক্রমণ করার নির্দেশ দেন। আসামিরা রাস্তায় অবস্থানরত ছাত্র-জনতার ওপর ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ভীতির সৃষ্টি করে তাঁদের হাতে থাকা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি ও মারধর করেন।
তখন মিলন মাছের আড়ত থেকে বাড়ি ফেরার পথে দুপুর ১২টার দিকে গুলিবিদ্ধ হয়ে রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন। তাকে উদ্ধার করে সাইনবোর্ড এলাকায় অবস্থিত প্রো-অ্যাকটিভ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন।