নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার কাশীপুর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদের দ্বিতীয় জামাতে খতীব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন আঞ্জুবাহার জামে মসজিদের খতীব মুফতি মুহাম্মাদ ইমদাদুল হক।
নামাজের আগে এক ব্যক্তি তাকে অনুরোধ করেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জন্য বিশেষ দোয়া করতে। তবে তিনি সকল মুসল্লির কথা বিবেচনা করে নিরপেক্ষ অবস্থান নেন এবং কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তির নাম উল্লেখ না করে দোয়া করেন।
নামাজ শেষে বের হওয়ার সময় মোঃ শৈকত হাসান ইকবাল, সহ-সাধারণ সম্পাদক, ফতুল্লা থানা যুবদল, ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং জানতে চান কেন তিনি খালেদা জিয়ার নাম উল্লেখ করেননি। উত্তরে মুফতি ইমদাদুল হক জানান, তিনি তার সুস্থতার জন্য দোয়া করেছেন, তবে নির্দিষ্ট কারও নাম নেওয়া বাধ্যতামূলক নয়।
এতে ইকবাল আরও উত্তেজিত হয়ে সকল মুসুল্লির সামনে মুফতি ইমদাদুল হকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন এবং হুমকি দেন যে, তার চাকরি চলে যাবে ও তিনি তাকে দেখে নেবেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠায়, মুফতি ইমদাদুল হক আর কোনো বিতর্কে না জড়িয়ে দ্রুত ঈদগাহ ময়দান ত্যাগ করেন।
তিনি কাশীপুর ইউনিয়নের মুরব্বিদের কাছে এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন এবং কাশীপুর ইউনিয়ন বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যেন তারা দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়।
শরিফুল ইসলাম সিয়াম নামে এক যুবক বলেন আজকের এই ঈদগাহে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি আমাদের মুসলিম সমাজের জন্য এক দুঃখজনক ও অগ্রহণযোগ্য ঘটনা। ঈদের নামাজ আমাদের জন্য এক বিশেষ দিন, যেখানে আমরা একত্রিত হয়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করি এবং পরস্পরের সাথে শান্তিপূর্ণ ও দয়া-ভরা সম্পর্ক বজায় রাখি। কিন্তু আজ যে ঘটনাটি ঘটল, তা আমাদের হৃদয়ে কষ্ট দেয়।
তিনি আরো বলেন আমরা প্রত্যেকেই এখানে ঈদের নামাজ পড়তে এসেছিলাম শান্তি ও একতা প্রতিষ্ঠার জন্য। কিন্তু যখন একজন সম্মানিত আলেম, যিনি আমাদের ঈদের জামাতের খতীব ছিলেন, তাকে হেনস্তা করা হয়, তখন এটি আমাদের সকলের জন্য লজ্জাজনক। ধর্মীয় নেতাদের প্রতি এমন আচরণ আমরা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারি না।
আমরা আশা করি, এই ধরনের ঘটনা আর কখনো ঘটবে না এবং এর সুষ্ঠু বিচার হবে। আমাদের সমাজে শান্তি, সহযোগিতা ও সহনশীলতা প্রতিষ্ঠিত হওয়া উচিত।
বিশ্বাস রাখি, আমাদের ইসলামিক মূল্যবোধ এবং সম্মান একে অপরের প্রতি থাকতে হবে, বিশেষ করে ধর্মীয় নেতাদের প্রতি, যারা আমাদের ধর্মীয় শিক্ষা দেন এবং আমাদের পথনির্দেশ করেন।
আমরা সকল মুসুল্লি, মোরাব্বি এবং সমাজের নেতাদের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, যেন তারা এই ঘটনার বিচার করেন এবং আমাদের সম্মান রক্ষা করতে উদ্যোগী হন।